পরিবেশ ও জলবায়ু
প্রতিবেদক: BS Software
আপডেট: ৪৬ দিন আগে
জায়গাটা হলো তুরস্কের কোনিয়া। বাইজেন্টাইনরা বলত ‘আইকোনিয়াম’। সেখান থেকে ‘কোনিয়া’। কোনিয়া অবস্থিত রুম নামের সেলজুক সালতানাতে। জালালুদ্দিন জীবনের বড় অংশ কাটাবেন এখানেই। সেখান থেকে পরে লোকে তাঁকে ডাকবে ‘রুমি’ নামে। আরবি ভাষায় ‘রুমি’ মানে রোমান। আরবরা এই জায়গা পুবের রোমান সাম্রাজ্য বা বাইজেন্টাইনদের কাছ থেকে দখল করেছিল। তাই এই অংশকে ডাকা হতো ‘রুম’ বা ‘রোমান’ নামে।
জালালুদ্দিন ছিলেন একজন ঐতিহ্যবাহী শাস্ত্র–পণ্ডিত। তাঁর বাবা ও পিতামহ দুজনই ছিলেন বড় পণ্ডিত ও শিক্ষক। জ্ঞানী বলে খ্যাতি ছিল সর্বত্র। সাঁইত্রিশ বছর বয়সী জালালুদ্দিন একদিন বসে আছেন এক জলাধারের পাড়ে। সময়টা ১২৪৪ সাল। অনেকগুলো বই পাশে রাখা। একটা বই পড়ছেন তিনি।
এমন সময় কোথা থেকে এসে হাজির হলো একজন উষ্কখুষ্ক লোক। গায়ে মোটা কালো চাদর, ধুলোমাখা। জালালুদ্দিনকে সে জিজ্ঞাসা করল, ‘কী পড়ছ?’ জ্ঞানগর্বী জালালুদ্দিন পড়া থেকে মাথা তুলে তাকালেন আগন্তুকের দিকে। অবজ্ঞার স্বরে বললেন, ‘এসব তুমি বুঝবে না।’ লোকটা হেসে চুপ করে রইল। তারপর সব কটি বই হঠাৎ ছুড়ে ফেলে দিল জলে। বইগুলো ডুবতে দেখে জালালুদ্দিন ‘হায় হায়’ করে উঠলেন। অমূল্য সব বই!
জালালুদ্দিনের আক্ষেপ দেখে হেসে এবার খ্যাপাটে লোকটা এগিয়ে গিয়ে জলে হাত ডুবিয়ে দিল। অবাক কাণ্ড! জল থেকে তিনি বই তুলে আনছেন একটা একটা করে। সব কটি বই শুকনা! এক–বিন্দু জলের স্পর্শ লাগেনি তাতে। বিস্ময়ে অভিভূত জালালুদ্দিন বলে উঠলেন, ‘এ কী করে সম্ভব?’ লোকটা এবার প্রশ্রয়ের হাসি হেসে বলল, ‘এসব তুমি বুঝবে না।’
মাওলানা রুমি তাঁর জন্মজগতের বাইরে ভেসে উঠেছেন। একেবারে তাজা। কালের আর্দ্রতার কোনো স্পর্শ নেই তাঁর গায়ে।
পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে আরও পড়ুন